বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের জন্য আরো বেশি আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করার এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর)।
ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র শাবিয়া মন্টু আজ জেনেভায় এক প্রেস
ব্রিফিংকালে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ৭ লাখের অধিক রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ সপ্তাহে তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে
আসার পাঁচ বছর পূর্ণ হল। বিগত কয়েক বছরে আরো হাজার হাজার রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে
এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করায়
পরিস্থিতি জটিল হয়েছে এবং একটি মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দাতা সংস্থাগুলোর সাহায্যে
বাংলাদেশ সরকার ও স্থানীয় কমিউনিটি মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে
আসছে। এখন কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরের রূপ নিয়েছে।
রোহিঙ্গারা ইউএনএইচসিআরকে বলেছে, তারা তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরে
যেতে চায়, তবে এজন্য প্রয়োজন তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা। তারা তাদের
নাগরিকত্বের স্বীকৃতি এবং আয়রোজগারের নিশ্চয়তা চায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কক্সবাজারে এখন প্রায় দশ লাখের বেশি
রোহিঙ্গা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ায় তারা এখন তাদের দৈনন্দিন
জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যথাযথ পুষ্টি, আশ্রয়সামগ্রী,
পয়ঃনিষ্কাশন এবং বেঁচে থাকার সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দরকার।
মন্টু বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায়শই নানাধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার
খবর প্রকাশ হচ্ছে, আর তাই এখানে বসবাসরত নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত
করা প্রয়োজন। শিশু ও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, বিশেষ করে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার
ঘটনা ঘটলেও তারা আইনি সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় মেডিকেল সুবিধা পায় না।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বেঁচে থাকার সুযোগ-সুবিধা
নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাদের
নিরাপত্তায় সহায়তা দিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় দশ হাজার রোহিঙ্গা শিশু মিয়ানমারের কারিকুলামে এবং মিয়ানমার ভাষায় লেখাপড়া করছে। এ অবস্থার আরো প্রসারে আরো সহায়তা দরকার।
মন্তব্য করুন