বাংলা সনের জ্যৈষ্ঠ
মাসের অপর নাম মধূ মাস। কেননা জ্যৈষ্ঠ এলেই কেবল মৌসূমী ফলের নাগাল পাওয়া যায়। এই মাসেই
আবহাওয়ার প্রতিকুলতাকে সাথে নিয়ে আম, জাম কাঁঠাল লিচুসহ নানা প্রজাতির ফলের গন্ধে মৌ
মৌ চারিদিক। বাজার জুড়ে চোখ বুলালেই শুধুই মৌসুমি ফলের সম্ভার। ফল বাগানে গেলেতো কথাই
নেই। খাওয়ার পূর্বে দেখেই যেন মন ভরে যায়। আর যদি সুযোগ হয় গাছ থেকে নিজ হাতে ফল পেড়ে
খাওয়ার, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। ফলের এই আনন্দ ধারা বিরাজ করছে এখন মিরসরাইয়ে আম চাষী
এবং ক্রেতাদের মধ্যে।
মোট ১৩০ হেক্টর
জমিতে আমের আবাদ করেছেন ২শ’ আমচাষী। লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার মেট্রিক
টন আম উৎপাদনের।
অনুকূল আবহাওয়া
ও সঠিক পরিচর্যার কারণে চলতি মৌসুমে মিরসরাইয়ে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। গাছে গাছে দুলছে
নানান জাতের আম। আর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে আম পেড়ে বাজারজাত করবে আম চাষিরা। দাম
ভালো পেলে লাভবান হবে বলে আশা করছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে গিয়ে
দেখা যায়, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, মিরসরাই, খৈয়াছরা ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের
পাহাড়ের পাদদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা আম্রপালি, ল্যাংড়া, গোপাল ভোগ, হাঁড়িভাঙা, মল্লিকা,
ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, ফজলিসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য
ইউনিয়নেও আমের চাষ করা হয়েছে।
করেরহাট ইউনিয়নের
পশ্চিম অলিনগরে অবস্থিত মধুরিমা রিসোর্ট হিলডেস মাল্টি ফার্মের উদ্যোক্তা অস্ট্রেলিয়া
প্রবাসী মঈন উদ্দিন বলেন, আমার বাগানে ৮শত আম্রপালি, হাঁড়িভাঙাসহ বিভিন্ন জাতের আম
গাছ রয়েছে। গতবারের চেয়ে প্রতিটি গাছে ভালো ফলন হওয়ায় এবার আশা করছি ৩ শত মেট্রিক টন
আমের উৎপাদন হবে। ক্রেতাদের জন্য বাগানে এসে আম পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি
খুচরা ও পাইকাররা সরাসরি আম কিনে নিয়ে যেতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
জোরারগঞ্জের আমচাষী
ফিরোজ খাঁন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ২ একর জায়গা জুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির আমের
বাগান করেছি। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া ভাল হওয়ায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার আম বিক্রি
করে খরচ পুষিয়ে ৩ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মিরসরাইয়ে এবছর ১৩০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ করেছেন ২শ’ আমচাষী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ৪ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে আমের ভালো দাম থাকায় বাগান মালিক ও আমচাষীরা লাভবান হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।’
- নাছির উদ্দিন/মিরসরাই
মন্তব্য করুন