বাংলাদেশ এখন
পদ্মা সেতুর দেশ, মেট্রোরেলের দেশ, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেলের দেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের
দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াবার দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত চৌদ্দ বছরে
বদলে গেছে বাংলাদেশ। বদলে যাওয়া এ বাংলাদেশের গল্প আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে ভারতীয় পত্র-পত্রিকায়
উঠে আসবে এবং জানতে পারবে ভারতের জনগণসহ বিশ্ববাসী। সফররত ভারতের সাংবাদিকদের সাথে
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মত বিনিময় সভায় কলকাতা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কিংসুক প্রামাণিক বলেন, সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপুর্ব উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি দেখে বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা বিশ্বে মডেল হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
৮ জানুয়ারী রবিবার
বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লাব
সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা। বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান,
কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিষ সুর, আসাম সাংবাদিক নেতা মনোজ কুমার গোস্বামী
ছাড়া্ও দুইদেশের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশের মহান
স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের জনগণের সহযোগিতা ও ত্যাগ-স্বীকার শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ভারতীয় সৈনিকরা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে। বুকের
রক্ত দিয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। এ বন্ধন সবসময় অটুট থাকবে।
ভৌগোলিক সীমারেখা নির্ধারণের কারনে দু’দেশের মাঝখানে
কাাঁটাতারের বেড়া থাকলেও মননে মানসিকতায় সংস্কৃতি চর্চায় সর্বোপরি দু’দেশের জনগণের
ভালবাসা এক ও অভিন্ন।
সফররত ভারতীয়
সাংবাদিকরা এ সময় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তাদের রচিত বেশ কয়েকটি
গবেষণাধর্মী বই ও প্রকাশনা মন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন। এছাড়াও দুই দেশের সাংবাদিক
নেতৃবৃন্দ পরস্পর সম্মাননা স্মারক বিনিময় করেন।
এর আগে সকালে
ভারতীয় সাংবাদিক দল চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পৌঁছলে চট্টগ্রাম পিআইডির উপপ্রধান তথ্য
অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীরের নেতৃত্বে তথ্য মন্ত্রণালয়াধীন সবকটি দপ্তরের উর্ধ্বতন
কর্মকর্তাগণ তাদের স্বাগত জানান। এসময় তাদের সাথে একই বিমানে আগত তথ্যমন্ত্রীকেও স্বাগত
জানানো হয়।
ভারতীয় সাংবাদিকদের
এ দলে কলকাতা প্রেসক্লাবের ২৫ ও আসাম প্রেসক্লাবের ৯ জনসহ মোট ৩৪ জন সিনিয়র সাংবাদিক
রয়েছেন।
পরে সফররত সাংবাদিক
দল বিমানবন্দর থেকে কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শনে যান। কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক
মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী টানেল মুখে সাংবাদিকদের স্বাগত জানান। পরে সেখানে তাদের টানেল
কার্যক্রম বিষয়ে তিনি সংক্ষিপ্ত ব্রিফ দেন। এসময় প্রকল্প পরিচালক জানান, কর্ণফুলী টানেলের
শতকরা ৯৫.৫ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন চলছে শেষ মূহুর্তের কার্যক্রম। সব কাজ শেষে আগামী
মার্চ নাগাদ টানেলটি যান চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
খরস্রোতা কর্ণফুলীর
তলদেশ দিয়ে বৃহৎ ও সুদৃশ্য এ টানেল দেখে সফররত সাংবাদিকরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এবং
বিশাল এ কর্মযজ্ঞের উচ্ছসিত প্রশংসা করেন। তারা বলেন, কলকাতায় মেট্রোর জন্য ছোট আকারের
একটি টানেল থাকলেও কর্ণফুলীর মতো এতোবড় টানেল নেই। তারা বিভিন্ন প্রশ্ন করে টানেলের
বিষয় বিষদভাবে অবহিত হন। পরে সাংবাদিক দল কর্ণফুলীর নদীর তীর ঘেঁষে নির্মিত সুদৃশ্য
মেরিন-ড্রাইভ ও চলমান বে- টার্মিনালের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
দুপুরে প্রতিনিধি দল পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব পরিদর্শন করেন। বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-এর স্মৃতিধন্য এ স্থাপনা দেখে তারা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এসময় তারা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিকন্যা প্রীতিলতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকেলে সফররত সাংবাদিকদল বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র ও বাটালি হিল পরিদর্শন করেন।
- মা.ফা