চট্টগ্রাম মহানগরকে নান্দনিক, ব্যবসা-উপযোগী, গ্রীণ-সিটি হিসেবে রূপান্তর করতে হলে পর্যায়ক্রমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও আধুনিকায়নের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে মান্ধাতার আমলের প্রক্রিয়াগুলোর পরিবর্তন করতে হবে। বর্জ্য-ব্যবস্থাপনায় উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মডেল অনুসরণ করে আধুনিক বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মনে করে জনবল সংকট ও আর্থিক সাশ্রয় বিবেচনায় বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও আধুনিকীকরণে আউটসোর্সিংয়ের কোন বিকল্প নেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় একথা বলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন-কক্ষে আয়োজিত ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড আবাসিক এলাকার সমন্বয়ক ফোরামের সাথে বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় মেয়র আরো বলেন, ইতোমধ্যে জাপানের জাইকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোইকা কর্তৃক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সম্ভ্যাব্যতা যাচাই-বাছাইপূর্বক কিছু প্রস্তাবনা চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনকে দেয়া হয়েছে। এরই আলোকে মেডিকেল-বর্জ্য অপসারণ করার জন্য হালিশহরস্থ আনন্দবাজারে টি.জির পাশে ইনসিনেরেটর প্লান্ট স্থাপন করা হয়। জাইকা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনসিনেরেটর (চুল্লী) স্থাপন করছে। এ ইনসিনেরেটর প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিষাক্ত মেডিক্যাল-বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা আইনে উৎপন্ন বর্জ্য উৎপত্তিস্থল থেকে গৃহস্থালী, প্লাষ্টিক, ধাতব তিনভাগ করে অপসারণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ঢাকাসহ অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনসমুহে এই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে। বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন ২৪ ও ৭ নং ওয়ার্ডকে পরীক্ষামূলকভাবে আউটসোর্সিংয়ের আওতায় আনার প্রক্রিয়া গ্রহণ করছে। পর্যায়ক্রমে ৪১টি ওয়ার্ডে আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে।
মেয়র আরো বলেন, মেসার্স পাওয়ার সোর্সের মাধমে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন ডাস্টবিন গুলোকে পর্যায়ক্রমে ফুলের বাগানে পরিণত করার ফলে এলাকাবাসি সন্তুষ্ট। সমন্বয় ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে আউট সোসিংয়ের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে যে মত বিনিময় হয়েছে তা ফলপ্রসু। তবে কোন কিছু জোর করে চাপিয়ে দেয়ার কোন অবকাশ থাকতে পারে না। কোন পরিবর্তন রাতারাতি আনা সম্ভব নয়। তাই সকলের সহযোগিতা ছাড়া কোন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সমন্বয় ফোরামের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. মহসিন, মো. এনামুল হক, এ.এম জহিরুল আলম, শহিদুল্লাহ পাটোয়ারী, সাবেক কাউন্সিলর মো. জাবেদ নজরুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন বিভাগের জোন প্রধান আলী আকবর প্রমুখ।
সভায় আবাসিক এলাকায় রাস্তা, বিদ্যূৎ, কালভার্ট ও নালা সমুহ পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংলিষ্ট প্রকৌশলীদের তৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করায় সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান আবাসিক এলাকা সমন্বয় ফোরামের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম।
২৫ সেপ্টেম্বর হতে মেসার্স পাওয়ার সোর্সের ব্যবস্থাপনায় ২০০জন সেবক, ২০জন সুপারভাইজার ১২টি থ্রি হুইলার গাড়ী ৩০টি ভ্যানের মাধ্যমে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও অলিগলি হতে গার্ভেজ-ব্যাগের মাধমে বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
- মা.ফা