নয়াদিল্লি দীর্ঘ মুলতবী
থাকা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিতে স্বাক্ষর করা এবং সীমান্তে হত্যা বন্ধ নিশ্চিত
করার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয়
কোয়াত্রা। ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা
ফরেন সার্ভিস একাডেমির ফরেন অফিসে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ
বিন মোমেন একথা বলেন।
আলোচনা শেষে
ব্রিফিংকালে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারত আশ্বস্ত করেছে যে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার
তিস্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও চুক্তিটি নিয়ে নয়াদিল্লি এবং
রাজ্য সরকারের (পশ্চিমবঙ্গ) মধ্যে মতপার্থক্য এখনও সমাধান হয়নি। ভারতীয় পক্ষ
সীমান্তে হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এই বলে যে,
তারা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে একটিও প্রাণহানি দেখতে চায় না।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন,
ঢাকা সীমান্ত হত্যা ইস্যুটি জোরালোভাবে উত্থাপন এবং সীমান্তে হত্যা শূন্য পর্যায়ে
নামিয়ে আনার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে। যেকোনো দুঃখজনক ঘটনা এড়াতে চোরাচালান কমাতে
দুই সীমান্ত বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ ভারতীয় পক্ষ
থেকে বিদ্যমান সকল বাণিজ্য বাধা অপসারণ এবং বাংলাদেশে পণ্যদ্রব্যের সুষ্ঠু সরবরাহ
নিশ্চিত করতে ভারতের সহায়তা চেয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ
আরো বলেন, আমরা ভারতের সমর্থন চেয়েছি যাতে আমরা নেপাল এবং ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ
আনতে পারি। ভারতীয় পক্ষ এই বিষয়ে
তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে এবং আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুতের পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত
করতে বাংলাদেশকে তার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে।
মাসুদ বলেন, আমরা
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানাব, যাতে আমরা নেপাল থেকে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে
বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারি। বাংলাদেশ বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
আমদানি করে। ঢাকা অদূর ভবিষ্যতে ভারত থেকে আরো বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ আমদানি করবে
বলে আশা করছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ
আরো বলেন, বাংলাদেশ আশা প্রকাশ করেছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের
সেপ্টেম্বরে ভারতের সভাপতিত্বে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে
গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এফওসিকে জানিয়েছেন যে, নয়াদিল্লি তার
প্রতিবেশীর অগ্রাধিকার নীতির অধীনে ঢাকার সাথে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার
দেয়। ভারতীয় ঋণের আওতায় যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে সেগুলো
নিয়েও তারা আলোচনা করেছেন।
এদিকে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, কোয়াত্রা এবং মাসুদ এফওসি চলাকালীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। উভয় পক্ষই ভারত সরকারের অর্থায়নে লাইন অফ ক্রেডিট, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সংযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরো জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। তারা যৌথ স্বার্থের বিষয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ বাড়াতে সম্মত হয়েছে।
- মা.ফা.