চট্টগ্রাম বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
চট্টগ্রাম বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

জাতীয়

‘চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করে এগিয়ে গেলেই নিজেদের প্রকৃত নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।

আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি আমি চাই – প্রধানমন্ত্রী।

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২২ আগস্ট ৩১, ০৬:১০ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করে এগিয়ে গেলেই নিজেদের প্রকৃত নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। কিন্তু গড্ডালিকা প্রবাহে অর্থ সম্পদের পেছনে ছুটলে ঐ অর্থ সম্পদেই ভেসে যেতে হয়। তাতে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতাও থাকেনা, দেশ এবং মানুষকেও কিছু দেয়া যায় না।

 

৩১ আগস্ট বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকাবহ আগস্টের শেষ দিনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।



প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মানবতার সেবার পাশাপাশি লেখাপড়া শিখতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি আমি চাই। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব আসবে এবং সেজন্য আমাদের আজকের প্রজন্ম বা প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেদেরকে প্রস্তুত করবে।

 

তিনি আলোচনা সভায় বলেন, এখন তথ্যপ্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের যুগ। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-দীক্ষায় উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। কেননা দেশ চালাতে গেলে শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে। তেমনি আমাদের ইতিহাস জানতে হবে এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের খুনীদেরকেই শুধু এদেশে পুরস্কৃত করা হয়নি, ৭ই মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সাথে স্বাধীনতার পুরো ইতিহাসটা মুছে ফেলে দিয়ে আবিস্কার হলো এক মেজর হুইসেল দিল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। আর এজন্য সংগ্রামের যে পথ ও ইতিহাস সেটা তাদের জানা নেই। তাই আমি বলবো, ছাত্ররাজনীতি করতে হলে ইতিহাস জানতে হবে।

 

দেশের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারি সংগঠন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি ছাত্রলীগ সম্পর্কে অনেক কথা লেখা হয়। এতবড় একটা সংগঠন আর আমরা ক্ষমতায় আছি বলে অনেকেই ভেতরে ঢুকে যায় এবং নিজেরাই গোলমাল করে, বদনামটা পড়ে ছাত্রলীগের ওপর।

 

তিনি অনুপ্রবেশকারী সম্পর্কে সংগঠনের নেতৃত্বকে সাবধান করে দিয়ে বলেন, ছাত্রলীগকে সংগঠন করার সময় গ্রুপ ভারী করতে আলতু ফালতু লোক দলে ঢোকালে চলবে না। তাতে নিজেদের দলের এবং দেশের বদনাম হয়।

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পেছনে লোক লেগেই আছে এবং লেগেও থাকবে। ছাত্রদল কত অপকর্ম করে গেছে সেটা নিয়ে কথা নেই। কিন্তু ছাত্রলীগের একটু কিছু হলেই বড় নিউজ। সেজন্য নিজেদেরই ঠিক থাকতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে তাঁর হাতে তৈরী সংগঠন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি, আমাদের উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হবে। আর সারা বাংলাদেশে একটি মানুষ ও গৃহহীণ থাকবে না।

 

প্রধাণমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নিজ নিজ এলাকার ভুমিহীন-গৃহহীণদের তথ্য সংগ্রহ করে তাঁকে দিতে বলেন যেন তিনি তাদের জন্য গৃহনির্মাণ করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, একেবারে গ্রাম থেকে যেন উন্নয়ন হয় সেই লক্ষ্য অর্জনে এবং আগামী দিনে বাংলাদেশ পরিচালনায় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে স্বাধীনতার আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। যেন সঠিক নেতৃত্ব দেয়া যায়। ধন সম্পদ, টাকা-পয়সা এগুলো কাজে লাগেনা। করোনার সময় অনেক ধনী মানুষের টাকার পাহাড়ও কাজে লাগে নাই। এটা মাথায় রাখতে হবে। এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য।

 

তিনি দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানার পাশাপাাশি জ্ঞান আহরণে জাতির পিতার লেখা (অসমাপ্ত আত্মজীবনী) (কারাগারের রোজনামচা) এবং (আমার দেখা নয়া চীন) সহ জাতির পিতাকে নিয়ে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার যে রিপোর্ট তাকে ভিত্তি করে লেখা সিক্রেট ডকুমেন্ট সিরিজের বইগুলো প্রতিটি ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের পড়ার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে তাদের সম্পৃক্ত হবার আহবান জানান। কেননা বিশ্ব আরও গভীর খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হতে পারে। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে ছাত্রলীগকে ধানের চারা রোপণে সাহায্য করতে হবে যেভাবে তারা কোভিড-১৯ সময়কালে ধান কাটার সময় সাহায্য করেছিল। তিনি বিদ্যুৎ, পানি এবং জ্বালানি ব্যবহারেও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সাশ্রয়ী হবার আহবান জানান।

 

আলোচনা সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের দুটি প্রকাশনা মাতৃভূমি এবং জয়বাংলার মোড়ক উন্মোচন করেন।

 

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সভার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন এবং সাইদুর রহমান হৃদয়, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান ও জুবায়ের আহমেদ এবং ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জীব চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।

 

সভার শুরুতে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদ এবং ৫২র ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।


- মা. ফা

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Video